শিরোনাম :
সাপ্তাহিক আলোর মনি পত্রিকার অনলাইন ভার্সনে আপনাকে স্বাগতম। # সারাবিশ্বের সর্বশেষ সংবাদ পড়তে আমাদের সঙ্গেই থাকুন। -ধন্যবাদ।
শিরোনাম :
লালমনিরহাটে হেমন্তের বিদায়লগ্নে জেঁকে শীতের দাপট লালমনিরহাটের নদীগুলোর চরে এখন সবুজ বিপ্লব লালমনিরহাটে চাকরীচ্যুত সকল বিডিআর সদস্যকে চাকরীতে পুনর্বহালের দাবিতে- মানববন্ধন অনুষ্ঠিত বিএনপি সব সময় অন্যায়ের বিরুদ্ধে লড়াই করে: লালমনিরহাটে বিএনপির জাতীয় স্থায়ী কমিটির সদস্য ইকবাল হাসান মাহমুদ টুকু লালমনিরহাটে এলসিসিআই মডেল স্কুলের পাঠ সমাপনী ২০২৪খ্রি. অনুষ্ঠিত লালমনিরহাটে দিন দিন কমছে আখ চাষ লালমনিরহাটের শালবন হতে পারে পর্যটন কেন্দ্র লালমনিরহাটে মানব পাচার প্রতিরোধ কমিটির সদস্যদের সক্ষমতা বৃদ্ধির জন্য কর্মশালা অনুষ্ঠিত লালমনিরহাট জেলা আইনজীবী সমিতির নির্বাচনে নির্বাচিত হলেন যাঁরা! সার সিন্ডিকেট হোতারা ধোঁয়া ছোঁয়ার বাহিরে কেন
অনিয়ম আর দূর্নীতিতে ভরপুর লালমনিরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস!

অনিয়ম আর দূর্নীতিতে ভরপুর লালমনিরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস!

লালমনিরহাট জেলা জুড়ে রয়েছে একটি আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিস। সেই পাসপোর্ট অফিসে অনিয়ম আর দূর্নীতিতে ভরপুর। ওই অফিসের কর্মচারীরা সরকারি নিয়ম না মেনে নিজ নিয়মে চালাচ্ছেন অফিস।

 

অফিস শুধু নিজ নিয়মে নয়, অফিসটিতে দালালে ভরপুর। জেলার বিভিন্ন উপজেলা থেকে আসা সহজ-সরল আর নিরীহ লোকজন দিনের পর দিন অফিস ঘুরে পাচ্ছেন না পাসপোর্ট। শুধু আজ-কাল করে কাটাচ্ছেন দীর্ঘ সময়। ওই অফিসের বিলম্বের কারণে ভুক্ত-ভুগীরা সঠিক সময় পাচ্ছেন না অন্যান্য দেশের ডাক্তারি সেবাসহ বিভিন্ন কাজে যোগদান করতে।

 

ওই অফিসের অফিস সহায়ক বাবুল (৩৮) তিনি যোগদান করেন ২০১৩ সালে। তিনি গত ২৬/১০/২০২২ তারিখে হাসিবুর রহমান (হাসান) নামের এক ব্যক্তির কাছে পাসপোর্ট করে দেওয়ার কথা বলে ৪০হাজার টাকা নেন মোবাইল ফোনের নগদ নাম্বারে। সেই টাকা আদান-প্রদানের সমস্ত প্রমানাধি সংরক্ষণ রয়েছে। আজও মেলেনি তার সেই পাসপোর্ট।

 

মোবাইল ফোনের আলোচনা থেকে জানা যায়, হাসিবুর রহমান (হাসান) লালমনিরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসে যান পাসপোর্ট করার জন্য। ওই সময় বাবুল অফিসেই ছিলেন। বাবুল হাসানের সঙ্গে আলোচনার এক পর্যায়ে বলেন, আপনার পাসপোর্টের জন্য টাকা দিতে হবে ৫০হাজার।

 

আলোচনার এক পর্যায়ে বাবুল তার এক মাধ্যমের মোবাইল ফোনের নগদ (০১৯৪৭৩২৩০১৩) নাম্বারে ৩৫,০০০+৫০০০ (চল্লিশ হাজার) টাকা নেন অগ্রিম কাজ বাবদ। বাবুলের শুধু একজন মাধ্যম নয়, পুরো জেলা জুড়ে রয়েছে বিশাল সিন্ডিকেট। প্রতারক বাবুল লালমনিরহাট-ঢাকা উভয় অফিসে আছে তার দালাল।

 

টাকা নিয়ে দু’দিন পর হাসিবুর রহমান হাসানকে দু’টি মোবাইল নাম্বার দিয়ে পাঠিয়ে দেন রাজধানী ঢাকা পাসপোর্ট অফিসে।

 

ওই নাম্বার দু’টি খোঁজ নিয়ে জানা যায়, তারা ঢাকা পাসপোর্ট অফিস বাবুলের দালাল চক্রের সদস্য। তারা হাসিবুর রহমান হাসানকে বলে আপনার পাসপোর্ট এখানে হবে না। পরে বাবুলকে ফোন দিলে আর ফোন ধরেন না। শুধু হাসান নয়, এ রকম অনেক অসহায় লোক আছে যারা ওই পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহায়ক বাবুল প্রতারকের স্বীকার হয়েছে।

 

বাবুলের এক মাধ্যম নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এ জেলার মানুষজন অনেক সহজ-সরল, কিছুদিন আমাকে ব্যবহার করে অনেক মানুষকে ঠগিয়েছে বাবুল। তার প্রতারণার স্বীকার হয়ে অনেক লোক আমার দোকানে আসে এমনকি বাবুলও আসে। ভালো সম্পর্ক হওয়ার কারণে কিছু বলতে পারিনা। কিন্তু হাসান ভাইয়ের মত সরল লোককে ধোঁকা দিবে এটা মানতে পারিনা।

 

পাসপোর্ট করতে আসা আরও এক ভুক্তভোগী আরশাদ মাহমুদ হাসান (লাল) সাংবাদিকদের বলেন, আমি সরকারি চাকুরী থেকে অবসর নিয়েছি, অনেক দিন হলো পাসপোর্ট করতে দিয়েছি কিন্তু এখনো পেলাম না। বাবুল আজ-কাল করছে, এভাবে আর ঘুরবো কতোদিন। মোটা অংকের টাকা না দেওয়ায় শুধু ঘুরপাক খাচ্ছি। আমরা এই হয়রাণী থেকে মুক্তি চাই।

 

ভুক্তভোগী হাসানকে এ বিষয়ে জিজ্ঞাসা করলে তিনি সাংবাদিকদের বলেন, আমি পাসপোর্ট অফিসে যেয়ে দেখি বাবুল অফিসে বসা, তাকে পাসপোর্ট বিষয়ে কথা বললে তিনি বলেন ৫০হাজার টাকার লাগবে।

 

চিকিৎসা করার জন্য যাবো, তাই রাজি হয়ে যাই। পাঁচ দিনের মধ্যে পাসপোর্ট দিবে, এই কথা বলে একটি মোবাইলের নগদ নাম্বার দেন, সেই নাম্বারে ৩০হাজার টাকা দেই, পরে আরও ৫হাজার দেই। ঢাকা যাতায়াত দু’বার করি সেখানে খরচ হয় প্রায় ১০দশ হাজার টাকা।

 

তিনি আরও সাংবাদিকদের বলেন, অফিসের লোককে টাকার বিষয়ে বলার পর তিন টিপে অন্য লোক মাধ্যমে আমাকে ২৯হাজার টাকা ফেরত দিয়েছে। আমি ওই প্রতারক বাবুলের বিচার দাবি করছি।

 

এ বিষয়ে পাসপোর্ট অফিসের অফিস সহায়ক বাবুল টাকা নেয়ার বিষয়টি স্বীকার করে সাংবাদিকদের বলেন, পাসপোর্টের কাজটি করার জন্য চেষ্টা করেছি-কিন্তু হয়নি, ওনার টাকা ফিরত দিয়েছি। কিছু কিছু পাসপোর্ট আছে “এক লাখ” টাকাও খরচ নেয়া হয়। আমি কাজ করি বিধায় আমার ভুল হয়।

 

লালমনিরহাট আঞ্চলিক পাসপোর্ট অফিসের সহকারী পরিচালক বজলুর রশিদ এ বিষয়ে সাংবাদিকদের বলেন, পাসপোর্ট বিষয়ে কোন অবৈধ লেনদেনের সুযোগ নেই, অফিসের কেউ অবৈধ লেনদেন করলে তার বিরুদ্ধে তদন্ত করে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেয়া হবে।

সংবাদটি শেয়ার করুন




এই ওয়েবসাইটের কোনো লেখা ও ছবি অনুমতি ছাড়া ব্যবহার বেআইনি
Design & Developed by Freelancer Zone